দুর্নীতির তথ্য পেয়েও নিরব ছিল বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ

দুর্নীতিবাজ সিলেট বিআরটিএর এডি রিয়াজ ও আব্দুল বারীর প্রত্যাহারের দাবীতে আন্দোলন

Passenger Voice    |    ১১:৩৮ এএম, ২০২৩-০৩-২০


দুর্নীতিবাজ সিলেট বিআরটিএর এডি রিয়াজ ও আব্দুল বারীর প্রত্যাহারের দাবীতে আন্দোলন

সামসুদ্দীন চৌধুরীঃ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সিলেট সার্কেলে কর্মরত সহকারী পরিচালকের চলতি দায়িত্ব পাওয়া রিয়াজুর ইসলাম, মোটরযান পরিদর্শক আব্দুল বারী ও দেলোয়ার হোসেনের অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের বিশাল মানববনন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আজ সকাল ১১ টার দিকে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে মিছিল আকারে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হয় ঘুষ দুর্নীতির স্বীকার মালিক শ্রমিকরা।

সিলেট বিআরটিএর দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যসহ রিয়াজুর ইসলাম ও আব্দুল বারী অপকর্ম নিয়ে ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর কব্জির জোর, আব্দুল বারীর সিলেটে বদলীতে নীতিমালা মানেনি বিআরটিএ (পর্ব-১) “ঘুষ ও দুর্নীতিতে ৪ জনের সিন্ডিকেট সিলেট বিআরটিএতে, ঘুমন্ত কর্তৃপক্ষ” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্যাসেঞ্জার ভয়েস। সব কিছু অবগত হয়েও এই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি বিআরটিএর প্রশাসন বিভাগ। লোকমুখে অভিযোগ রয়েছে বিআরটিএর শীর্ষ পর্যায়ের দুইজন কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে এই দুই কর্মকর্তা দুর্নীতির রাম রাজত্ব চালাচ্ছিলেন। ফলে সকল অপকর্ম জেনেও মুখ খুলেনি কেউ। শীর্ষ কর্মকর্তাদের এমন উদাসিনতায় বিআরটিএর ভাবমুক্তি চরম অবনতি হয়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারের দুই বছরের সকল অর্জন।

দীর্ঘ সময় ধরে বিআরটিএ সিলেট সার্কেলের চলমান অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে অসন্তোষ ছিল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন গুলো। এর আগে সিলেট সার্কেলে ঘুষ দুর্নীতিতে জড়িয়ে সমালোচনায় ছিলেন সেই সময়ে সহকারী পরিচালকের (ইঞ্জিঃ)। বিআরটিএর অপকর্ম নিয়ে ২০২২ সালের ০৯ এপ্রিল সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। তবে সকলের অনুরোধে পরিবহন মালিকরা ধর্মঘট স্থগিত করলেও শ্রমিক আন্দোলন এর চাপে একই মাসের ১২ এপ্রিল বিআরটিএর সদর কার্যালয়ের এক আদেশে সেই সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) কে সিলেট সার্কেল থেকে মাগুরা সার্কেলে বদলি করা হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রিয়াজুল ইসলাম দায়িত্ব পাওয়ার লিষ্টে থাকায় উপর মহলে তদবীর করে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল নম্বর-৩৫.০৩.০০০০.০০১.১৯.১০৬.২০-৬৩১ নং আদেশ মূলে বিআরটিএ সিলেট ও সুনামগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পরচিালক (ইঞ্জিঃ)  চঃ দাঃ হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে নেন ।

সিলেট সার্কেলে বদলী হয়ে দালাল নিয়ন্ত্রণ, ঘুষ বাণিজ্যসহ সব ধরনের অপকর্ম নিজ হাতে তুলে নেন আব্দুল বারী। সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) রিয়াজুল ইসলাম, মোটরযান পরিদর্শক আব্দুল বারী, দেলোয়ার হোসেন ও মেক্যানিক্যাল এসিস্ট্যান্ট সাদিকুর রহমান  মিলে সিলেট বিআরটিএতে তৈরি করেন ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়ম দুর্নীতির আতুড় ঘর।

মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন প্রদান, ফিটনেস সনদ প্রদান, ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কম্পিট্রেন্সি টেষ্ট বোর্ডের পরীক্ষায় ও যানবাহনের মালিকানা বদলীসহ সব ধরনের সেবা প্রদানে অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য চালাচ্ছে তারা। ডজন ডজন অভিযোগ থাকার পরেও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজর দেয়নি। 

আন্দোলনকারীরা বলছে, ২০২২ সালের ২ অক্টোবর সিলেট মেট্রো আরটিসিতে সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) রিয়াজুর রহমানের প্রস্তাবের মাধ্যমে সিলেট জেলার ঠিকানায় রেজিস্ট্রেশনকৃত সিএনজি অটোরিকশার মালিকগণ মেট্রো ঠিকানায় বদলী হতে পারবেনা মর্মে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। আবার একই সিদ্ধান্ত ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে লঙ্গন করেছে এই সহকারী পরিচালক ও দুই মোটরযান পরিদর্শক। প্রতিটি সিএনজি অটোরিকশা থেকে ৫০/৬০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করে জেলার সিএনজি মেট্রো ঠিকানায় মালিকানা বদলী করছিলেন তিনি। মালিকানা বদলীর বিষয়টি সিলেট সিএনজি অটোরিকশার মালিক ও শ্রমিক সংগঠন গুলোর মাঝে জানাজানি হলে সিলেট জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। 

বিআরটিএর সিলেট বিভাগের উপপরিচালক (ইঞ্জিঃ) শহিদুল আযম প্যাসেঞ্জার ভয়েসকে বলেন, আমি আন্দোলনের বিষয়টি অবগত হয়েছি। সদর কার্যালয়ের সাথে পরামর্শ করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া অন্য কোন মন্তব্য করতে রাজী হয়নি বিআরটিএর এই কর্মকর্তা।

বিষয়টি জানতে সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (ইঞ্জিঃ) শফিকুজ্জামান ভুঁইয়ার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি খবর নিচ্ছেন বলে প্যাসেঞ্জার ভয়েসকে জানান।